স্বদেশ ডেস্ক:
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হাতে আটক পণবন্দীদের মধ্য থেকে চারজনের মুক্তির বিনিময়ে দু’দিনের মিনি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। এতে ইসরাইলের কারাগারে থাকা কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তির কথাও বলা হয়েছে। এই অস্ত্রবিরতির পর ব্যাপক একটি যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। তবে হামাস বা ইসরাইল নতুন এই মিসরীয় প্রস্তাবের ব্যাপারে কিছু বলেনি।
ইসরাইলি পক্ষ দাবি করছে যে হামাসের হাতে এখনো ১০১ জন পণবন্দী রয়েছে। এদের থেকেই চারজনের মুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট।
একটি সূত্র জানায়, মিনি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের উদ্দেশ হলো ‘বৃহত্তর আলোচনা শুরু করা।’
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের প্রধান উইলিয়াম বার্নস, ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোশাদের প্রধঅন ডেভিন বার্নিয়া এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-সানি দোহায় ব্যাপক আলোচনা শুরু করেছেন। তারা জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাবের আলোকে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি নিয়েও আলোচনা করছেন।
রোববার কায়রোতে গাজায় দু’দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। তিনি কায়রোতে আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল মাদজিদ তেবুনের সাথে সংবাদ সম্মেলনে জানান, সাময়িক যুদ্ধবিরতির পর স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছার জন্য ১০ দিনের মধ্যে আলোচনা শুরু করা দরকার।
তবে হামাস এই প্রস্তাব মানবে বলে মনে হচ্ছে না। আলোচনার সাথে ঘনিষ্ঠ একটি ফিলিস্তিনি সূত্র রয়টার্সকে জানান, ‘আমি আশা করি, হামাস নতুন প্রস্তাব শুনবে। তবে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকবে যে যেকোনো যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুদ্ধের অবসান হতে হবে, গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার হতে হবে।’
এদিকে চলতি মাসের প্রথম দিকে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল আশাবাদী হয়ে ওঠেছিল যে এখন একটি চুক্তি হওয়া সম্ভব।
তবে কাতারভিত্তিক ফিলিস্তিনি সূত্র জানায়, সিনওয়ারের মৃত্যুর পর গাজার কর্মকর্তাদের মধ্যে এই অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে যে তাদের আর কিছু ‘হারাবার নেই।’ তারা এখন দৃঢ়ভাবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যহারের দাবি জানাচ্ছে।
অন্যদিকে ইসরাইল জোর দিয়ে বলছে যে যেকোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আগে গাজাকে অবশ্যই নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, ইসরাইলের এখন বেদনাদায়ক ছাড় দেয়ার সময় এসেছে। তিনি বলেন, বেদনাদায়ক ছাড় দিয়ে আমাদের পণবন্দীদের ফিরিয়ে আনার নৈতিক ও নীতিগত কর্তৃব্য পালন করতে হবে।
উল্লেখ্য, ইসরাইলের চ্যানেল ১২ ইতোপূর্বে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে মিসরের মিনি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি শিন বেত প্রধান রোনেন বার জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করেছিলেন। বেশিভাগ মন্ত্রী এবং সকল নিরাপত্তা প্রধান তাতে সম্মতি দিয়েছিলেন। কেবল অর্থমন্ত্রী বেজালের স্মট্রিপ এবং জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির এর বিরোধিতা করেছিলেন।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য